
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জিয়াউর রহমানের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে ছিল।জাতীয়তাবাদী চিন্তাভাবনা ও উদ্যোগে নতুন বাংলাদেশ গঠনের যে প্রত্যয় দিয়েছিলেন, তা পরবর্তীতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন জনাব তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবার নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে, স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে আমাদের নেতা তারেক রহমান।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর আলমাস হলের সামনে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র্যালী পূর্বক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে র্যালির আয়োজন করা হয়।এর আগে র্যালি পূর্ব এক সমাবেশ নগরের আলমাস সিনেমা হল প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে,সদস্য সচিব নাজিমুর রহমারেন পরিচালনায়
এসময় বক্তব্য রাখেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডাক্তার শাহাদাত হোসেন, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন,মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপি নেতা শামসুল ইসলাম, মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, এডভোকেট আবদুস সাত্তার, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইদ্রিস চেয়ারম্যান সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দীন,মুজিবুর রহমান সহ মহানগর, উত্তর-দক্ষিণ জেলা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশ শুরুর আগে বিকাল আড়াইটা থেকে চট্টগ্রামের বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের থানা, উপজেলা ও ওয়ার্ডের অসংখ্য মিছিল সমাবেশ স্থল আলমাস সিনেমা এলাকাকে কেন্দ্র করে ওয়াসা, কাজীর দেউড়ি এলাকা পর্যন্ত অবস্থান নেয়।
তিনি বলেন,দক্ষিণ এশিয়াতে সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। আজকে সমাবেশে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি হিসেবে আপনারা আবারও প্রমাণ করেছেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেম, উন্নয়নের উদ্যোগ, চাষি, শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশ। এর আগে বাংলাদেশ ছিল একটি গোষ্ঠীর হাতে সীমাবদ্ধ।
আমীর খসরু বলেন, ইতিমধ্যেই সমস্ত বাংলাদেশের মানুষ তারেক রহমানের প্রতিটি স্বপ্নের সঙ্গে নিজেদেরকে দেখতে পাচ্ছেন। স্বপ্নগুলো কী? এক নম্বর স্বপ্ন হচ্ছে-বাংলাদেশের মানুষের কর্মসংস্থান। তারেক রহমান সাহেব বলেছেন, ক্ষমতায় যদি দেশের মানুষ আমাদেরকে দায়িত্ব দেয়, প্রথম আঠারো মাসে এক কোটি মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। চাকরি করবে, ব্যবসা করবে, দেশে কর্মসংস্থান ও বাইরে কর্মসংস্থান—সবকিছু পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই সমাপ্ত হয়েছে।
আমীর খসরু বলেন, এই স্লোগানটি শুধুমাত্র রাজনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ নয়, অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে। অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করে বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষ যাতে আগামী বাংলাদেশে অর্থনীতিতে উন্নয়নের সহযোগিতা করতে পারে, অংশগ্রহণ করতে পারে, নিজেদের জীবনযাপনের মান উন্নয়ন করতে পারে—এটাই হবে আগামী বাংলাদেশ, তারেক রহমানের নেতৃত্বে। আরও অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম কাজ হবে আমাদের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। গণতন্ত্র ফিরে আনতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে হবে। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ হবে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক। জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংসদের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া-পাওয়ার কথাগুলো বলতে পারবে, যা এখন কেউ বলতে পারছে না।
তিনি বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্র ফেরার পথে যদি কেউ বাধা দিতে চায়, নির্বাচনকে বাধা দেওয়া মানে- গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করা, বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা বন্ধ করা এবং আগামীতে মানুষের রাজনৈতিক সংবিধানিক অধিকারে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করা। সুতরাং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের হৃদয় জানে, আজকে বাংলাদেশে ধানের শীষের জোয়ার শুরু হয়েছে। এই জোয়ারকে কেউ বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে তারা ভেসে যাবে। আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। দেশের মানুষ যাকে ইচ্ছা নির্বাচিত করতে পারবে। এখন কেউ যদি মনে করে তারা নির্বাচিত হতে পারবে না, সেজন্য নির্বাচনের প্রয়োজন নেই, সেটা তাদের সমস্যা; এটা বাংলাদেশের মানুষের সমস্যা নয়। সুতরাং বার্তা পরিষ্কার, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সমস্ত জনগণ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদেরকে গ্রামে গঞ্জে যেতে হবে, তারেক রহমানের নির্দেশিত খালকাটা প্রকল্প হাতে নিতে হবে। প্রত্যেক এলাকার খালগুলো কেটে পানির নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে হবে। সবকিছু সমাধান হবে ইনশাল্লাহ। তারেক রহমান সাহেব ৩০ কোটি গাছ লাগাবেন। সকলে মিলে আগামী বাংলাদেশ করতে হবে। নেতা নয়, সকলের অবদান থাকতে হবে। এজন্য রাজনীতির সাথে সাথে আমরা অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রের কথাও বলছি।
সমাবেশ শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বর্ণাঢ্য র্যালি চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেটে গিয়ে শেষ হয়।