
পবিত্র ইসলাম প্রচারক হযরত খাজা শরফুদ্দীন চিশতি (রহ.)’র মাজার শরীফ (হাইকোর্ট মাজার) উগ্রবাদী অপশক্তি কর্তৃক স্থানান্তরের চক্রান্তের প্রতিবাদে এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআ’ত এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সচিব আল্লামা মুফতি গিয়াস উদ্দীন আত-তাহেরীসহ সুন্নী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আজ ১৭ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকাল ৩ টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত এর চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস আল্লামা কাজী মঈনুদ্দীন আশরাফী। প্রধান বক্তা ছিলেন নির্বাহী চেয়ারম্যান আল্লামা আবুল কাশেম নূরী। মাওলানা শাহ নুর মোহাম্মদ আলকাদেরীর সভাপতিত্বে ও আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুন নবী আলকাদেরীর পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মজলিশে শূরা সদস্য অধ্যক্ষ আল্লামা স. উ. ম আবদুস সামাদ, অধ্যক্ষ আল্লামা আবুল ফারাহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, শায়খুল হাদিস জয়নাল আবেদীন জুবাইর, অধ্যক্ষ এস.এম. ফরিদ উদ্দিন, এম সোলায়মান ফরিদ। প্রধান অতিথি আল্লামা আশরাফী বলেন, নতুন বাংলাদেশে যে শান্তির প্রত্যাশা করেছিলাম, তা তৌহিদি জনতা নামধারী মব বাহিনী একেরপর এক ধ্বংস করে দিচ্ছে। অলি-আল্লাহর বিরুদ্ধে এ উগ্রবাদি শক্তি দেশে এক প্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর দেশব্যাপী পীর-আউলিয়া কেরামের মাযার শরীফ সমূহে উগ্রবাদীদের ঘৃণ্য হামলা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সুফীবাদি সুন্নী মুসলমানদের চরমভাবে আশাহত করেছে। এ যাবৎ শতাধিক মাযারে হামলা, লুটপাট, অগ্নি সংযোগের মত জঘন্য ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালিত হলেও এক্ষেত্রে দোষীদের চিহ্নিত করে প্রচলিত আইনে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হয়নি। ফলে প্রতিনিয়ত দেশব্যাপী এ ধ্বংসযজ্ঞ ঘটনা আশংকাজনক ভাবে বেড়ে চলেছে। এবার বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের প্রাঙ্গণ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রাঙ্গণ থেকে মাজার স্থানান্তর ও বহুতল মসজিদ নির্মাণ পুনর্বিবেচনার জন্য জনৈক আইনজীবী কর্তৃক আবেদন করে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত করেছে। তিনি বলেন, ঢাকা যখন ঢাকা হয় নি, তখন হযরত খাজা শরফুদ্দীন চিশতি (রহ.) ঢাকায় ইসলাম প্রচার করে আবাদ করেছেন। ঢাকা হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠার ৬০৭ বছর পূর্বে ১৩৪০ ইংরেজি সালে ওলী-এ-বাংলা হযরত শাহ্ খাজা শরফুদ্দিন চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহির মাজার শরীফ প্রতিষ্ঠা হয়। পরবর্তী হাইকোর্ট মাজার নামে খ্যাত হয়। এ পবিত্র মাজার শরীফ সরানোর কথা বলা সরাসরি ইসলামের উপর আঘাত। তা আহলে সুন্নাত কখনও তা মেনে নেবে না। তাই হাইকোর্ট মাজার শরীফ সরানোর ষড়যন্ত্র সুন্নী জনতাকে সাথে নিয়ে প্রতিহত করব। আমাদের দাবি হলো- নিরাপত্তার প্রয়োজনে মাজার প্রাঙ্গণ থেকে হাইকোর্ট-সুপ্রীম কোর্ট অন্যত্র সরিয়ে নিন। আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআতের সাংগঠনিক সচিব মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরীসহ সুন্নী নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন। মুফতি তাহেরী ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)’র দিন ঢাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছিলেন, তাকে মামলা দেওয়া হয়েছে ওইদিন বি-বাড়ীয়া জেলার তথাকথিত ঘটনায়। এধরণের মিথ্যার আশ্রয় যারা নেয় তারা প্রকৃত মুসলমান নন। আমরা সরকারকে বলতে চাই, অবিলম্বে সুন্নী নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। অন্যথায়, সুন্নী জনতা উগ্রবাতিল অপশক্তিকে প্রতিহত করলে কেউ পার পাবে না।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, ইব্রাহিম আখতারী, মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসাইন, এম মহিউল আলম চৌধুরী, সৈয়দ এয়ার মোহাম্মদ পেয়ারু, অধ্যাপক মীর আব্দুর রহিম মুনীরি, মাওলানা ইউনুচ তৈয়্যবী যুক্তিবাদী, মাওলানা ওয়াহেদ মুরাদ, নাসির উদ্দিন মাহমুদ, আলমগীর ইসলাম বঈদী, মুহাম্মদ আলী হোসেন, হাফেজ গোলাম কিবরিয়া, মাওলানা হাসান আল আজহারী, এইচ.এম. মঈনউদ্দিন চৌধুরী হালিম, মাওলানা গিয়াস উদ্দিন নিজামী, হাবিবুল মোস্তফা ছিদ্দিকী, মুহাম্মদ এনামুল হক, মাছুমুর রশিদ কাদেরী, নাজিম উদ্দিন কাদেরী, নকিব উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ। সমাবেশ শেষে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।