
দেশজুড়ে ডেঙ্গু রোগে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে, তবে সবচেয়ে গুরুতর পরিস্থিতি দেখা গেছে রাজধানীর বড় হাসপাতালগুলোতে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে একাই ৩৩ জন রোগী মারা গেছেন, আর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বড় হাসপাতালগুলোতে অতিরিক্ত রোগীর চাপ থাকায় মৃত্যুর হার তুলনামূলক বেশি।
আজ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
মৃত্যুর পরিসংখ্যান
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ২, হাসপাতালে ভর্তি ৬৭৮
সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি) শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদ বলেন, চলতি বছরে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ২০–৩০ বছর বয়সী রোগীদের মধ্যে, তবে মৃত্যুর ঘনত্ব বড় হাসপাতালগুলোতে বেশি।
ডেঙ্গু রোগীদের মৃত্যুর ডেথ রিভিউ চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত ১১৪টি ডেথ রিভিউ সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বড় হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেশি থাকায় মৃত্যুর সংখ্যা বেশি।
তিনি আরও জানান, ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেছেন ৫৭ জন, এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেছেন ৭৮ জন। অনেক রোগী ভর্তি হওয়ার সময়ই গুরুতর অবস্থায় থাকেন। মারা যাওয়া রোগীদের প্রায় ৪০ শতাংশের অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগ ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, ‘আমাদের যত ব্যবস্থাপনা নেই, জনগণ সচেতন না হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। বড় হাসপাতালে অতিরিক্ত চাপ থাকলে সেবা প্রদানে সীমাবদ্ধতা তৈরি হয়, ফলে দ্রুত চিকিৎসা জটিল হয়ে পড়ে।’
তিনি আরও জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে, তবে মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে গেছে।
ডিরেক্টর (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘বড় হাসপাতালে রোগীর চাপ সামলানোর জন্য আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) গাইডলাইন অনুযায়ী আধুনিক চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত ফ্লুইড ও চিকিৎসা সামগ্রী মজুদ রাখা হয়েছে যাতে রোগীদের সেবা জটিল না হয়।