প্লাস্টিকের বিনিময়ে ঘর সাজানোর সামগ্রী: চট্টগ্রামে ক্লিন বাংলাদেশের অভিনব উদ্যোগ

প্লাস্টিকের বিনিময়ে ঘর সাজানোর সামগ্রী: চট্টগ্রামে ক্লিন বাংলাদেশের অভিনব উদ্যোগ

“প্লাস্টিক দিলেই মিলবে ঘর সাজানোর সামগ্রী”— এমন স্লোগানে শুরু হয়েছে এক ব্যতিক্রমী পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ। ক্লিন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় শুরু হয়েছে “ক্লিন বাংলাদেশ প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার” কার্যক্রম।

এই অনন্য উদ্যোগের মূল লক্ষ্য নাগরিকদের উৎসাহিত করা যেন তাঁরা অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিক ও পলিথিন ফেলে না দিয়ে তা পুনঃব্যবহার বা পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করার অভ্যাস গড়ে তোলেন। প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নারে অংশগ্রহণকারীরা ব্যবহার শেষে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক সামগ্রীর বিনিময়ে ঘর সাজানোর নানান উপকরণ পাচ্ছেন।

কার্যক্রমটি চলবে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত ১৮, ১৯, ২০ এবং ২৫, ২৬, ২৭ অক্টোবর— শনিবার, রোববার ও সোমবার—চট্টগ্রাম নগরীর গুলজার টাওয়ারের দক্ষিণ গেইটে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব ও চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল আলীম এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট রুবাইয়াত তাহরীম সৌরভ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্লিন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শওকত হোসেন জনি এবং সঞ্চালনা করেন টিম লিডার মেজবাহ উল হক ইমন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মতি টাওয়ার ও মতি কমপ্লেক্স ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জিয়াউর রহমান জিয়া, মহানগর যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা প্রমুখ।

উদ্বোধনী বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা একটি পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও জলাবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম চাই। আজকের দিনে প্লাস্টিক, পলিথিন ও ককশিট ব্যবহারের ফলে শহরে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব সামগ্রী যত্রতত্র না ফেলে রি-ইউজ বা সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে। পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে “ক্লিন বাংলাদেশ” যে মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। তাদের এই উদ্যোগে সবাইকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে।

“সবুজায়নের লক্ষ্যে প্রত্যেকে যদি নিজের বাসার আঙিনা, রাস্তার পাশে, বারান্দায় ও আশপাশে গাছ লাগায়, তবে ১০ লক্ষ গাছ লাগানোর লক্ষ্য পূরণ সম্ভব। গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে—তাই এর কোনো বিকল্প নেই।আমরা যে শহরে বাস করি, সেটিকে ভালোবাসতে হবে। প্লাস্টিক ও পলিথিন যত্রতত্র না ফেলে সচেতন হতে হবে। এগুলো রিসাইকেল বা রিইউজ করতে হবে।’’’

প্রফেসর আব্দুল আলীম বলেন শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মকে পরিবেশবান্ধব কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে পারলে ভবিষ্যতে পরিচ্ছন্ন শহর ও দেশ গঠনে এটি বড় ভূমিকা রাখবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট রুবাইয়াত তাহরীম সৌরভ বলেন প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় এই ধরনের স্থানীয় উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।

অনুষ্ঠানে টিম লিডার মাওয়া ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহার করে তৈরি বিভিন্ন ঘর সাজানোর সামগ্রী প্রদর্শন করেন, যা উপস্থিতদের দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করে।ক্লিন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই কার্যক্রমের উদ্দেশ্য শুধু বর্জ্য সংগ্রহ নয়, বরং নাগরিকদের মধ্যে “বর্জ্য নয়, সম্পদ”— এই ধারণাটি প্রতিষ্ঠা করা।এই উদ্যোগে ক্লিন বাংলাদেশের টিম লিডার লায়লা বেগম, তানজিফা, সারু, রনি, শরিফ, রাফি, পারভেজ এবং স্বেচ্ছাসেবক তাসফিয়া, সালমা, সাব্বির, সাজিদ, নঈম, রাকিব, মমতাজ, মিম, আনিসুল ইসলাম, ইসরাত জাহান, রিয়া, উর্মি, সুমাইয়া প্রমুখসহ প্রায় শতাধিক সেচ্ছাসেবী অংশগ্রহণ করেন।

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email