বাঘাইছড়িতে ৫৫০ কেজি এতিম ও দুস্থদের প্রাপ্য মাংস পেলেন সরকারি কর্মকর্তারা

বাঘাইছড়িতে ৫৫০ কেজি এতিম ও দুস্থদের প্রাপ্য মাংস পেলেন সরকারি কর্মকর্তারা

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় সৌদি আরব সরকারের পাঠানো প্রায় ৫৫০ কেজি দুম্বার মাংস বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দরিদ্র ও এতিমদের জন্য বরাদ্দ এই মাংসের বড় একটি অংশ উপজেলা প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও প্রেসক্লাবের সদস্যদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে গেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় সৌদি সরকারের পাঠানো ২২ কার্টুন দুম্বার মাংস বাঘাইছড়ি উপজেলায় আসে। প্রতিটি কার্টনে ২০–২৫ কেজি করে মাংস ছিল। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এসব মাংস ইউনিয়ন, এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বিতরণের কথা ছিল।

কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে—ইউনিয়নে বিতরণ হয়েছে ৮ কার্টুন, এতিমখানা ও মাদ্রাসায় গেছে মাত্র ৩ কার্টুন, ১ কার্টুন পথে উধাও, আর প্রেসক্লাবসহ কয়েকজন প্রভাবশালী পেয়েছেন অন্তত ২ কার্টুন। বাকি ১০ কার্টুন বা প্রায় ২৫০ কেজি মাংসের কোনো হদিস মেলেনি।

বাঘাইছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি আব্দুল মাবুদ (বিজয় টিভি), কোষাধ্যক্ষ মহিউদ্দিন (বাংলাদেশ বেতার, রাঙামাটি)  নিশ্চিত করেছেন যে প্রেসক্লাবকে একটি কার্টুন মাংস দেওয়া হয়েছে। তারা বলেন, এই মাংসে উপজেলা পরিষদ থেকে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গ্রহণ করেন, তবে সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। অন্য সূত্র বলছে, প্রেসক্লাবের জন্য দুটি কার্টুন বরাদ্দ ছিল।

স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এতিম ও গরীবদের প্রাপ্য মাংস প্রেসক্লাবের নামে ভাগ দেওয়া অনৈতিক ও লজ্জাজনক। সাংবাদিকতার নামে কেউ যদি ব্যক্তিগত সুবিধা নেয়, তা পুরো সাংবাদিক সমাজের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে।”

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমেনা মারজান বলেন, “এই বিষয়ে জানতে হলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে হবে।” তবে পিআইও সুপ্তশ্রী সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সচেতন মহলের দাবি, এতিম ও দুস্থদের প্রাপ্য অনুদান আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email