
মানবসেবার মহান ব্রতকে ধারণ করে ধর্মপ্রাণ উপাসক-উপাসিকাদের জন্য প্রভাত-মুক্তা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দিনব্যাপী ফ্রি তীর্থভ্রমণ কর্মসূচি গত ৩১ অক্টোবর শুক্রবার সম্পন্ন হয়েছে। মিরসরাই থানার দমদমা গ্রাম থেকে ভোর পাঁচটায় বাসযোগে যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে তীর্থভ্রমণকারীদের মাঝে আইডি কার্ড এবং সকালের নাস্তা প্রদান করা হয়। সকাল সাড়ে আটটার দিকে রাঙামাটি রাজবন বিহারে পৌঁছায়। সেখানে সাধনানন্দ ভিক্ষুর (বনভান্তে) দেহধাতু দর্শন ও শ্রদ্ধা নিবেদন ছাড়াও প্রাজ্ঞ ভিক্ষুসংঘের উপস্থিতিতে পঞ্চশীল, অষ্টপরিস্কার দান, সংঘদানসহ বিভিন্ন ধর্মীয়কাজে অংশগ্রহণ করেন। দুপুরের খাবার গ্রহণের পর চিৎমরমের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। আঁকা-বাকা স্বপ্নীল পথ মাড়িয়ে পাহাড়ের বুক চিড়িয়ে গাড়ি চলতে থাকে সামনের দিকে। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে কোথাও রোদেলা, কোথাও আবছা আলোর ঘনঘটায় দু’দিকের সবুজ বনভূমির ভেতর দিয়ে অবশেষে বাস পৌঁছে যায় চিৎমরম। সেখান থেকে নৌকায় নদী পার হয়ে চিৎমরম মূল কাঠের বিহার, সম্প্রসারিত বৌদ্ধবিহারসহ কাছের অন্যান্য স্থাপনা উপভোগ করেন তীর্থযাত্রীরা। চিৎমরমে গিয়ে বুদ্ধবন্দনাসহ অন্যান্য ধর্মীয় কার্যাদি সম্পন্ন করা হয়। সেখান থেকে আর্যশ্রাবক ধ্যানাচার্য শীলানন্দ মহাস্থবির স্থাপিত রাঙ্গুনিয়া মরিয়মনগরে বৌদ্ধবিহারের সুরম্য ও সুদৃশ্য দেশনাগার, বুদ্ধ প্রতিবিম্বসহ শৈল্পিক স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়।
প্রভাত-মুক্তা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সুমন বড়ুয়া সকল তীর্থযাত্রীদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি তীর্থযাত্রীদের মানবিক কাজে আর্থিকভাবে না হলেও কায়িক কিংবা মানসিকভাবে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। তাদের সহযোগিতা পেলে আগামীতে আরো বড় পরিসরে আরো নানা মানবিক কর্মকান্ড আয়োজন করার ঘোষণা দেন।
অভিব্যক্তি ব্যক্ত করতে গিয়ে তীর্থযাত্রীরা বলেন, বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনা পরিদর্শনের সুযোগ করে দিয়ে প্রভাত-মুক্তা ফাউন্ডেশন যে মহত্বের পরিচয় দিয়েছে, তাতে আমরা অনেক আনন্দিত। নানা কর্মব্যবস্তার মাঝে পুরো একটি দিন ভ্রমণের সুযোগ করে দেয়ায় আমরা দেশের কয়েকটি তীর্থস্থান পরিদর্শন করতে পেরেছি। এই ফাউন্ডেশনের এমন মানবিক কর্মকাণ্ড আগামীতে আরো ব্যপকহারে হবে-এই প্রত্যাশা করেন।
প্রভাত-মুক্তা ফাউন্ডেশনের পরিচালক রাজন বড়ুয়ার তত্ত্বাবধানে ফ্রি তীর্থভ্রমনে সমন্বয় করেন অনিল বড়ুয়া, অর্ক বড়ুয়া, জুয়েল বড়ুয়া, রিগান বড়ুয়া এবং শুভ বড়ুয়া। তীর্থযাত্রী হিসেবে ছিলেন গোলাপী বড়ুয়া, সুরঞ্জন বড়ুয়া, মিন্টু বড়ুয়া, কালু বড়ুয়া, টগর বড়ুয়া, সজল বড়ুয়া, মিতা বড়ুয়া, সুখি বড়ুয়া, কেলি বড়ুয়া, চাঁপা বড়ুয়া, প্রতিমা বড়ুয়া, সবুজ রাণী বড়ুয়া, চাম্পা বড়ুয়া, পরেশ বড়ুয়া, রিংকু বড়ুয়া, মানি বড়ুয়া, পারুল বড়ুয়া, শোভা বড়ুয়া, সবুনা বড়ুয়া, শিল্পী বড়ুয়া, ভবেন্দু বড়ুয়া, চিনু বড়ুয়া, নিমন বড়ুয়া, গুরা বড়ুয়া, অঞ্জলী বড়ুয়া, পুষ্প বড়ুয়া, পরানী বড়ুয়া, তিন্নি বড়ুয়া, রেখা বড়ুয়া, সতিমা বড়ুয়া, শিখা বড়ুয়া, জহরলাল বড়ুয়া, শিংকু বড়ুয়া, শিল্পী বড়ুয়া, মানিক বড়ুয়া, নিলা বড়ুয়া, রিতা বড়ুয়া, সিপ্তি বড়ুয়া, আইরন বড়ুয়া, ভাবনা বড়ুয়া, দীপ্ত বড়ুয়া, কীর্তি বড়ুয়া, দুর্জয় বড়ুয়া এবং সৈনিক বড়ুয়া’সহ ৬৮ জন ধর্মপ্রাণ নরনারী। তাদের সরব এবং আনন্দময় অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে একটি সুন্দর-মানবিক দিনের পরিসমাপ্তি ঘটে।







