কোন অপচেষ্টা করে নির্বাচন বানচাল করা যাবে না

কোন অপচেষ্টা করে নির্বাচন বানচাল করা যাবে না

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আমরা যখন চট্টগ্রামে সভা করছি, ঢাকার আট নম্বর আসনের ওসমান হাদি হয়তো আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তফসিল ঘোষণার পরপরই যারা বলেছিল নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না, তারা নানা কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। যারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু নানান অপকর্মের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যাহত করতে চায়, বাংলাদেশের মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না। এসব করে কেউ পার পাবে না এবং নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। কোন অপচেষ্টা করে নির্বাচন বানচাল করা যাবে না।

তিনি শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকালে কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে চট্টগ্রাম ৯ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী আলহাজ্ব আবু সুফিয়ানের সমর্থনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ৯ আসনের অন্তর্ভুক্ত ১৪টি ওয়ার্ডের সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ৯ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবু সুফিয়ান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।

মেয়র বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমান ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। আগামী নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে বিএনপি ইনশাআল্লাহ ক্ষমতায় আসবে। অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রাজনৈতিক দলই রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি তিনবার দেশ পরিচালনা করেছে। তাই অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে বিএনপিই জনগণের রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্য দল।

সম্প্রতি লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মেয়র বলেন, আমি চসিকের নানা কার্যক্রম তাঁর কাছে তুলে ধরেছি। স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের কথা বললে তিনি বলেছেন, গরিব, দুঃস্থ, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে এই সুবিধার আওতায় আসতে হবে। তাঁরেক রহমানের উদার মানসিকতা এখানেই প্রকাশ পায়। তিনি কৃষক ও কৃষিকার্ড নিয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন।

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক ত্যাগ স্মরণ করে মেয়র বলেন, ব্যক্তির চাইতে দল বড়, দলের চাইতে দেশ বড়। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ধানের শীষ বিজয়ী হবে। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতীক ধানের শীষে ভোট দিয়ে আবারও বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে।

নয় সংসদীয় আসনের প্রার্থী আবু সুফিয়ানকে বিজয়ী করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুতই আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে জনগণের মাঝে ফিরে আসবেন এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশ আবারও সঠিক পথে এগিয়ে যাবে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে আবু সুফিয়ান বলেন, আমাকে চট্টগ্রাম ৯ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকে এই এলাকার নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। এই আসনের সবাই আমার প্রাণের সহযোদ্ধা, কারো প্রতি আমার রাগ বিরাগের কোন কারণ নেই। আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করবো। আপনাদের সাথে নিয়ে আমরা চট্টগ্রাম ৯ আসনে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে চাই। এখন থেকেই ওয়ার্ড, ইউনিট পর্যায়ে কাজ শুরু করে দিতে হবে। দলকে তৃণমূল পর্যন্ত সুসংগঠিত করতে হবে। তিনি স্থানীয় নেতাকর্মীদের জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য কাজ করার আহবান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবুল হাশেম বক্কর বলেন, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এর দাতভাঙ্গা জবাব দিতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি ৯ আসনে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হয়েছিলেন উল্লেখ করে বলেন, আপনারা আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। দল যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তাকে আমি সন্মান করি। আসুন, আমরা সবাই মিলেমিশে কাজ করে আবু সুফিয়ান সহ চট্টগ্রামের সবগুলো আসনে বিএনপির প্রার্থীদের বিজয়ী করতে কাজ করি।

সভাপতির বক্তব্যে নাজিমুর রহমান বলেন, এদেশের জনগণ যখনই সুযোগ পেয়েছে ভোট দিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। আগামী নির্বাচনেও জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। এদেশে বিএনপিই একমাত্র দল যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। গত ১৬ বছর বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন ও নিপীড়ন হয়েছে। কিন্তু বিএনপি বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যায়নি।

এতে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস এম সাইফুল আলম, হারুন জামান, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, শওকত আজম খাজা, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহম্মেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, শিহাব উদ্দিন মুবিন, আহবায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, মো. মহসিন, খোরশেদুল আলম, আনোয়ার হোসেন লিপু, একে খান, মাহবুব রানা, মো. ইসমাইল বালি, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মন্জুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাকির হোসেন, এম আই চৌধুরী মামুন, নুর হোসাইন, মহানগর মহিলাদলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, সাধারণ সম্পাদক জেলি চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক বেলায়েত হোসেন বুলু, সদস্য সচিব জমির উদ্দিন নাহিদ, তাতীদলের আহবায়ক সেলিম হাফেজ, সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মুরাদ প্রমুখ।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email