
রিলিজিয়নস ফর পিস বাংলাদেশ (আরএফপি) আয়োজিত চট্টগ্রাম পিস সামিটে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই পৃথিবীতে সকল ধর্মের আবির্ভাব হয়েছে। তাই প্রতিটি বড় বড় জনগোষ্ঠির চর্চিত ধর্মে শান্তির বাণীই প্রচার করা হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্ত:ধর্মীয় সুসম্পর্ক বজায় রাখার কোনো বিকল্প পন্থা নেই। তাই ধর্ম নিয়ে কোনো প্রতিযোগিতা হতে পারে না, এতে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ তৈরি হয়। যা মানব জাতির শুধুই ধ্বংসই ডেকে আনতে পারে।
চিটাগং ক্লাবের তেরেস হলে শনিবার( ৬ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী এই পিস সামিট অনুষ্ঠিত হয় এশিয়ান কনফারেন্স অব রিলিজিয়নস ফর পিস-এর সহযোগিতায়।
আরএফপি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. সুকান্ত ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পিস সামিটে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং আরএফপির নির্বাহী সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন আরএফপি এশিয়ার সেক্রেটারি জেনারেল রেভারেন্ট প্রফেসর ড. ইয়োশিনরি সিনোহরা, আরএফপি এশিয়ার বিশেষ উপদেষ্টা রেভারেন্ট ড. নবোহিরো নেমতো, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ওয়্যম্যানের ডিন প্রফেসর ড. জন ম্যাথিও। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আরএফপি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ড. মাছুম আহমেদ। সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন আরএফপি ঢাকার প্রেসিডেন্ট প্রিন্সিপ্যাল সুকোমল বড়ুয়া এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঢাকা চ্যাপ্টারের সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম।
পিস সামিটে উত্থাপিত প্রবন্ধে ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান উল্লেখ করেন, পৃথিবীতে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিতে হলে পারস্পরিক আস্থা ও সুসম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। প্রতিটি ধর্মীয় নেতাদের পরমতসহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে। আন্ত:ধর্মীয় সামঞ্জস্য বজায় রাখতে হলে যুবসমাজকে সঠিক ধর্মীয় মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে।
তিনি বলেন, সর্বধর্মীয় মনোভাবাপন্ন পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে সর্বাগ্রে। তা নাহলে পৃথিবীর দেশে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
বিশেষ অতিথিরা তাদের বক্তব্যে প্রায় অভিন্ন মত ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ প্রাকৃতিকভাবে একটি সুন্দর ও শান্তির দেশ। এখানকার নাতিশীতোষ্ণ ও মুগ্ধ পরিবেশ মানুষকে শান্তির পরশ বুলিয়ে যায়। কিন্তু তারপরও কোনো কোনো সময়ে এখানকার মানবমনে হিংসা-বিদ্বেষ উঁকি দিয়ে থাকে। তবে তা মানবহিতৈষী মানুষেরা প্রতিহত করে শান্তির বাতাবরণ নিয়ে আসে।
সামিটের দ্বিতীয় অধিবেশনে মতামত ব্যক্ত করেন, প্রফেসর ড. রাশেদা খানম, প্রফেসর ড. এনএইচএম আবু বকর, বৌদ্ধধর্মীয় নেতা সংঘ প্রিয় মহাথেরো, অধ্যাপক প্রভাত চন্দ্র বড়–য়া, শিক্ষক এনা সামস্যাং, চিত্রশিল্পী জসিম উদ্দিন, সাংবাদিক সুভাস দে, সংস্কৃতিকর্মী তাপস মজুমদার, নাট্যজন স্বপন মজুমদার, বিদ্যুৎ কান্ত নাথ, বিশ্বজিৎ বড়ুয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শান্তিকর্মী তপু চৌধুরী।