
দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার শায়খুল হাদিস, প্রধান মুফতি ও সদরুল মুহতামিম মুফতি হাফেজ আহমদুল্লাহ ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভোর সাতটার দিকে তিনি চট্টগ্রামের ন্যাশনাল হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মুফতি হাফেজ আহমদুল্লাহর ইন্তেকালে জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া ও সারাদেশের আলেম-উলামাদের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আজ রাত ৯টায় জামিয়ার মাঠে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্র ও ভক্তবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।
মুফতি হাফেজ আহমদুল্লাহ ১৯৪১ সালে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার নাইখাইন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই ধর্মীয় শিক্ষায় প্রখর ছিলেন। ১৯৬৩ সালে তিনি জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া থেকে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানে লাহোর ও মুলতানে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন মাওলানা ইদ্রিস কান্ধলভি, মাওলানা ফয়েজ আলী শাহ, মুফতি শফী উসমানীসহ নামকরা আলেমরা। মুহাম্মদ তাকি উসমানী ছিলেন তাঁর সহপাঠী।
দেশ প্রত্যাবর্তনের পর দীর্ঘ ২৩ বছর আল জামিয়াতুল আরবিয়াতুল ইসলামিয়া জিরিতে অধ্যাপনা করেন। পরে আল জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ায় যোগদান করে জীবন শেষ পর্যন্ত শিক্ষাদানে নিয়োজিত ছিলেন।
তিনি অসংখ্য গবেষণাধর্মী গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন, যার মধ্যে ‘মাশায়েখে চাটগামী’, ‘যুগোপযোগী দশ মাসায়েল’, ‘মাযহাব ও মাযহাবের প্রয়োজনীয়তা’, ‘তাসকীনুল খাওয়াতীর’, ‘মহিমান্বিত রমজান’ উল্লেখযোগ্য।
আল্লাহ তাআলা তাঁর আত্মাকে প্রশান্তি দান করুন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার, ছাত্র ও উলামায়ে কেরামের ধৈর্য বৃদ্ধি করুন।
তারেক রহমানের শোক
দেশের প্রবীণ আলেম ও মুহাদ্দিস চট্টগ্রামের আল জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসার সদরে মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি আহমদুল্লাহ ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন।
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও দেশের প্রখ্যাত আলেম মুফতি আহমদুল্লাহ সাহেব ইসলামী জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আদর্শ মানুষ হওয়ার যে শিক্ষা দিয়েছেন তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। পৃথিবী থেকে তাঁর চিরবিদায়ে ইসলামী জ্ঞানের এক দিকপালের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হলো এদেশের মুসলিম সমাজ। তিনি মানুষকে সৎপথে চলার জন্য কোরআন-হাদিসের আলোকে শিক্ষাদান করতেন। বিনয়, প্রজ্ঞা ও সৌজন্যবোধ ছিল তাঁর স্বভাবজাত। জ্ঞান ও পান্ডিত্যে একজন খ্যাতিমান আলেম হিসেবে তিনি ছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয়।
দেশের স্বনামধন্য ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি আহমদুল্লাহ এর মৃত্যুতে দেশ একজন নিবেদিতপ্রাণ আলেমে দ্বীনকে হারালো, এ শূন্যস্থান সহজে পূরণ হবার নয়।
আমি মুফতি আহমদুল্লাহ এর রুহের মাগফিরাত করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ, গুণগ্রাহী, ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও সমবেদনা জানাচ্ছি।