আবাসিক এলাকাগুলোর সমস্যা সমাধানে স্থায়ী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে : সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত

আবাসিক এলাকাগুলোর সমস্যা সমাধানে স্থায়ী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে : সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত

চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়নে রাস্তা, ড্রেনেজ, মশক নিধন, পরিচ্ছন্নতা, জনস্বাস্থ্যসহ প্রতিটি খাতে স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করাই তার প্রধান লক্ষ্য। অসম্পূর্ণ কাজগুলো দ্রুতই শেষ হবে—এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশন অঙ্গীকারবদ্ধ। আবাসিক এলাকাগুলোর নেতৃত্ব সহযোগিতা করলে উন্নয়ন কাজ আরো তরান্বিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রুপনগর কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হিলভিউ আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির বার্ষিক সভা–২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি এম. এ. বকর।
সভায় মেয়র তার এক বছরের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। তিনি জানান, চট্টগ্রামে ১০ লাখ শিশুকে টাইফয়েড ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে এবং স্কুলছাত্রীদের দেওয়া হয়েছে সার্ভিকাল ক্যান্সার প্রতিরোধক এইচপিভি ভ্যাকসিন। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সহায়তায় ‘ফ্যামিলি কার্ড’ বিতরণ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তারা ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা ও পুনর্বাসন সুবিধা পাবেন। তিনি জানান, অতীতে একটি পরিবারে একাধিক কার্ড তৈরির অপব্যবহার রোধে এখন থেকে প্রতিটি পরিবার মাত্র একটি কার্ড পাবে, অন্য কার্ড স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
মেয়র জানান, ৪১টি ওয়ার্ডে ৪১টি খেলার মাঠ নির্মাণ করা হবে, যার মধ্যে ১১টির কাজ প্রায় শেষ। আগ্রাবাদ শিশু পার্ক উদ্বোধনসহ আমবাগান ও বিপ্লব উদ্যান এলাকায় নান্দনিক গ্রিন পার্ক নির্মাণ কাজ চলছে। সার্কিট হাউজের সামনে একটি আধুনিক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক নির্মাণে সেনাবাহিনী সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে এবং কালুরঘাট এলাকায় একটি সাশ্রয়ী হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, নগরের খালগুলোর এখনো সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। তিনি জানান, “সাময়িকভাবে কোথাও কোথাও পানি উঠলেও এটি স্থায়ী সমাধানের পথে অগ্রগতির অংশ। সব খালের কাজ শেষ হলেই জলাবদ্ধতার সমস্যা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।” ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল করতে ড্রেনে সেন্সর সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ পুরোনো ব্রিজ ও কালভার্ট সংস্কারে সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে ডিপিপি প্রণয়ন করেছে।
মশক নিধনে মার্কিন প্রযুক্তির বিটিআই লার্ভিসাইড ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরে মেয়র বলেন, “শহরে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে বিটিআই অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণ হচ্ছে। শীতকালে কিউলেক্স মশার প্রকোপ বাড়তে পারে, তাই প্রতিদিনের স্প্রে কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”
মেয়র জানান, হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স এখন ঘরে বসেই পরিশোধ করা যাবে। পাশাপাশি “আমাদের চট্টগ্রাম” অ্যাপ চালু হতে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে নাগরিকরা রাস্তা ভাঙা, ময়লা, ড্রেন সমস্যা, স্ট্রিটলাইট, মশার উপদ্রবসহ যেকোনো অভিযোগ সরাসরি ছবি তুলে সিটি কর্পোরেশনকে জানাতে পারবেন, আর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবেন।
পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, “আমরা খাল-ড্রেন পরিষ্কার করি, কিন্তু নাগরিকরা যদি পলিথিন, প্লাস্টিক, ডাবের খোসা যত্রতত্র ফেলেন তবে জলাবদ্ধতা ও ডেঙ্গু সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। শহরটিকে নিজের শহর মনে করে সবাই দায়িত্বশীল হলে আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি ক্লিন, গ্রিন, হেলদি, সেফ ও স্মার্ট চট্টগ্রাম উপহার দিতে পারবো।”
অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইরফান আলম, ফয়জুল কবির, নাসিম, সইলব, দুলালসহ সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email