
চট্টগ্রামের ওয়ারলেস খুলশী গার্ডেন ভিউ হাউজিং সোসাইটিতে দীর্ঘ চার দশক ধরে বসবাসকারী এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার পরিবার হামলা, ভাঙচুর ও দখলচেষ্টার শিকার হয়েছেন। বৈধ কাগজপত্র, বিদ্যুৎ সংযোগ ও স্থায়ী ঘরবাড়ি থাকা সত্ত্বেও ১১ সেপ্টেম্বর রাতে তাঁদের মালিকানাধীন জমিতে আলমগীর আলমের নেতৃত্বে দেড় শতাধিক সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে হামলা চালায়। এতে নারী-শিশুসহ বাসিন্দারা প্রাণভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন।
মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরে ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে চার দফা দাবি উত্থাপন করেন ক্ষতিগ্রস্ত আফসানা চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ১৯৬৬ সালে তাঁর বাবা ও আত্মীয়রা মূল মালিকের কাছ থেকে এই টিলা জমি ক্রয় করেন এবং তখন থেকেই এখানে পরিবারসহ তাঁদের বসবাস। জমিতে ঘরবাড়ি, দোকান, বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগসহ শান্তিপূর্ণ একটি বসতি গড়ে ওঠে। এতদিন কোনো বিরোধ ছিল না, কিন্তু সম্প্রতি ভূমিদস্যুরা জমিটির প্রতি নজর দেয়। তাঁর ভাষায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে দেড় শতাধিক সন্ত্রাসী অতর্কিতে হামলা চালায়। তারা ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে, কেয়ারটেকার ও ভাড়াটিয়াদের পিটিয়ে বের করে দেয়, নারী-শিশুরা চিৎকার করে পালিয়ে যায়। আমরা আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে আত্মীয়দের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি।
তিনি অভিযোগ করেন, আলমগীর আলম নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে জমি দখলের চেষ্টা করছেন। এবার তিনি সন্ত্রাসীদের দিয়ে সরাসরি হামলা চালিয়েছেন। ঘটনার পর ১৩ সেপ্টেম্বর খুলশী থানায় মূলহোতা আলমগীর আলমকে প্রধান আসামী করা মামলা (নং: ০৮) করা হলেও এখনো কোনো হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে এ ঘটনায় দুর্বত্তদের ফেলে যাওয়া একটি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়। আফসানা বলেন, আমরা সাধারণ মানুষ। আমাদের কোনো রাজনৈতিক ক্ষমতা বা পেশিশক্তি নেই। তাহলে কি আমরা আইনের সুরক্ষা পাব না?
তিনি জানান, বর্তমানে তাঁদের ঘরবাড়ি ফাঁকা, নিরাপত্তার অভাবে কেউ ফিরতে পারছেন না। নারী ও শিশুরা এখনও আতঙ্কে রয়েছেন। প্রতিবেশীরাও এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে আফসানা চৌধুরী চার দফা দাবি তুলে ধরেন—১) হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ২) জমির বৈধ মালিকানা রক্ষায় প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ, ৩) পরিবারটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ৪) ভবিষ্যতে এমন হামলা রোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই। প্রশাসনের কাছে আবেদন, আমাদের জমি ও ঘরে ফিরে শান্তিতে থাকার সুযোগ দিন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আফসানা চৌধুরী, হুমায়ুন কবির, মিজানুর রহমান, সারজিলা সোয়েরও তাসনিয়া নূর প্রমূখ।