মিস ইউনিভার্স মঞ্চে জামদানির সৌন্দর্য তুলে ধরলেন মিথিলা

মিস ইউনিভার্স মঞ্চে জামদানির সৌন্দর্য তুলে ধরলেন মিথিলা

মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন মডেল ও অভিনেত্রী তানজিয়া জামান মিথিলা। তিনি বিশ্বের সামনে দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে বেছে নিয়েছেন জামদানি শাড়ি, যা বাংলাদেশের অমূল্য সাংস্কৃতিক সম্পদ। মিথিলার এই পোশাকটি বাংলাদেশের রাজকীয় ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যকে বিশ্বের মঞ্চে সবার সামনে উপস্থাপন করেছে।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) নিজের অনুভূতি শেয়ার করতে গিয়ে মিথিলা এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘মিস ইউনিভার্স মঞ্চে আমার জাতীয় পোশাকটি একটি রাজকীয় জামদানি শাড়ি, যা বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি জীবন্ত উত্তরাধিকার।’

জামদানি শাড়ি মুঘল যুগ থেকে বাংলার অভিজাতদের অত্যন্ত মূল্যবান পোশাক হিসেবে পরিচিত। এটি বাংলাদেশের রাজকীয় ঐতিহ্যের প্রতীক, যা শত শত বছরের সাংস্কৃতিক গর্বের প্রতিনিধিত্ব করে। মিথিলা জানান, ‘জামদানি এমন একটি কাপড়, যার প্রতিটি সুতোয় রয়েছে শিল্প, নিষ্ঠা এবং চিরন্তন কমনীয়তা।’

বাংলাদেশের নরসিংদী এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে তৈরি হওয়া জামদানি শাড়ি বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অমূল্য সম্পদ। এটি এক হাতে বোনা হয় এবং এতে ব্যবহৃত হয় সেরা সুতির তন্তু। বিশেষ এই শাড়ি তৈরিতে ১২০ দিনেরও বেশি সময় লেগেছে, যা এর কৃতির নিখুঁততা এবং সময়সীমাকে চিহ্নিত করে।

মিথিলার পরা শাড়িটি সজ্জিত হয়েছে সোনালী জরি মোটিফ এবং এতে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা। শাপলা মোটিফ শাড়ির ডিজাইনে জায়গা পেয়েছে এবং সোনার গয়নায়ও শোভা পাচ্ছে একই ফুলের নকশা। আফ্রিনা সাদিয়া সৈয়দা ডিজাইন করেছেন মিথিলার পরা জামদানি শাড়িটি, যার উপর ডিজাইন করা শাপলা ফুল বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জাতীয় অহংকারের প্রতীক।

এছাড়া, ৬ ইয়ার্ডস স্টোরি এর ডিজাইনার লরা খান মিথিলার গয়নাগুলি ডিজাইন করেছেন। এই গয়না ও শাড়ি একে অপরের সঙ্গে মানানসই এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও শৌর্যকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করছে।

বিশ্বের ইতিহাসে জামদানির গুরুত্ব এবং তার সাংস্কৃতিক মূল্য ২০১৩ সালে ইউনেস্কো ঘোষণা করেছিল, যখন এটি মানবতার অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। এর মাধ্যমে বিশ্বের মানুষের কাছে জামদানির চিরন্তন সৌন্দর্য এবং কারুশিল্পের বিশেষত্ব তুলে ধরা হয়েছে।

মিথিলার এ পদক্ষেপটি একদিকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের মৃৎশিল্প এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email